দেশ

চলে গেলেন ‘ভারতের আসল রত্ন’ রতন টাটা

বিশেষ প্রতিবেদন: একটি সর্ব ভারতীয় চ্যানেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির একটি সাক্ষাৎকার শুনছিলাম। যে কোন কারণে মন্ত্রীর বাড়িতে আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। কীভাবে আসতে হবে অর্থাৎ রাস্তার রুটম্যাপটা মন্ত্রীর কাছে তিনি জানতে চান। উত্তরে মন্ত্রী তাঁর ড্রাইভারকে ফোনটা দিতে বলেন। তাকেই বুঝিয়ে দেবেন বলেন মন্ত্রী। কিন্তু অকপটে ফোনের অপর প্রান্তের মানুষটি জানান , তাঁর কোনও ড্রাইভার নেই। তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে আসবেন। এ কথায় রীতিমতো চমকে যান মন্ত্রী। কারণ মানুষটি সাধারণ কেউ নন। দেশবিদেশের স্বনামধন্য শিল্পপতি তথা উদ্যোগপতি। তিনি আর কেউ নন- রতনলাল টাটা। অগাধ সম্পত্তি, অগাধ সমৃদ্ধি- কিন্তু একেবারেই সাদামাটা মানুষ ছিলেন তিনি। একেবারেই অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। সেই মানুষটি আর নেই। ষষ্টীতে দেবীর বোধনপর্বেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘ভারতের আসল রত্ন’ রতন টাটা। মুম্বাইয়ে ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে মাত্র ৮৬ বছরে চলে গেলেন। বাংলায় সেভাবে পা রাখতে পারেননি। কিন্তু বাংলা-বাঙালির ভাবাবেগের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছেন তিনি। সত্যি কথা বলতে কী, বাংলার শিল্পৃসংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে সংপৃক্ত করতে চেয়েছিলেন। আর পাঁচটা শিল্পপতির মতো স্রেফ মুনাফা বা শিল্প প্রসারের স্বার্থে নয় নিশ্চয়। কারণ সমাজসেবায় টাটা গ্রুপের অবদানের কথা সকলেই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন দেশবাসী। এ রাজ্যেও পা রাখতে চেয়েছিলেন রতন টাটা। সিঙ্গুরে তার সূচনা হয়েছিল। কিন্তু সেই সিঙ্গুরেই শেষ হয়ে গেল সব স্বপ্ন। শেষদিন অবধি আশা রেখেছিলেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। জটিল রাজনৈতিক আবর্তে তিনি বাংলা ছাড়তে বাধ্য হন। কিন্তু বাংলার মানুষের মনে রয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর বাংলা ছাড়ার দুঃখ তো ছিলই, আজও দুঃখ আরও বেড়ে গেল। শুধু বাংলা নয়, ইহলোক ছেড়ে অনেক অনেক দূরে দেবলোকে পাড়ি দিয়েছেন ‘ভারতের আসল রতন’ রতনলাল টাটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button