শিল্পাঞ্চল

শারদ সম্মান প্রদানে অনিয়ম! সেরার মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন চরমে

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর: সব করেও শারদ সম্মান জুটল না। মানুষের রায়ে সেরা। মন্ডপ, প্রতিমা সহ আলোক সজ্জায় নজর কেড়েছে শংকরপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। কিন্তু এত সব সত্ত্বেও বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান মিলল না। এসব নিয়ে কার্যত ক্ষোভপ্রকাশ করেন পুজো উদ্যোক্তারা। এমনকি এই পুরস্কারের বিবেচ্য তালিকায় শংকরপুর সার্বজনীনের নাম না থাকায় রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার। একইসঙ্গে এই পুরস্কারের মনোনয়ন নিয়েও এ সংক্রান্ত প্রশাসনিক বৈঠকে উষ্মাপ্রকাশও করেন তিনি বলে জানান শংকরপুর সার্বজনীনের অন্যতম কর্মকর্তা তথা এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বাধীন ঘোষ। তার কথায়, বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ। তবে কোনও রাজনৈতিক বা অন্য কোনও প্রভাবে নয়, পুজোর সার্বিক সাজশৈলীর যোগ্যতা মানে শংকরপুর সার্বজনীন দুর্গা পুজো কমিটির দাবি যথার্থ। সেক্ষেত্রে বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান না পাওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি।

দিন কয়েক আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মানে পুরস্কৃত পুজো কমিটি গুলির নাম ঘোষণা করা হয়। সেরা পুজো, সেরা প্রতিমা, সেরা মন্ডপ সহ অন্যান্য বিভাগে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের চতুরঙ্গ, নবারুণ, অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদ সহ বেশ কয়েকটির নাম রাখা হয়েছে। কিন্তু মন্ডপ, প্রতিমা সজ্জায় নজর কাড়লেও সেই তালিকায় ঠাঁই হয়নি শংকরপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির। তা নিয়ে উদ্যোক্তাদের তরফে এ ধরনের সেরার মনোনয়ন সঠিক হয়নি বলে মত তাদের। প্রকারান্তরে মনোনয়নে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ। তবে মন্ডপ, প্রতিমা বা পুজোর সার্বিক সৌন্দর্য্য নিয়ে নিজেরাই নিজেদের ঢাক পেটাচ্ছেন, এমনটা একেবারেই বলা যাবে না। সাধারণ দর্শনার্থীরা সকলেই একবাক্যে শংকরপুর সার্বজনীনের পুজোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। এমএএমসি লাগোয়া সুভাষ পল্লীর রিয়া সরকার, পলাশডিহার আশা প্রামানিক বা শিল্প নগরীর রেজ্জাক হোসেন, উখরার রাহুল মিত্র- সকলের মুখেই একটিই কথা- দুর্গাপুরের সেরা পুজো শংকরপুর সার্বজনীনই। সেক্ষেত্রে এই পুজো কোনও সরকারি স্বীকৃতি না পাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তারা। এমনকি সেরা মনোনয়নে চরম পক্ষপাতিত্ব হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিয়া সরকার, শিল্প নগরীর রেজ্জাক হোসেন সহ উখড়ার রাহুল মিত্ররা।

আর তাদের কথা যে অমূলক নয়, তা অন্তত ওই পুজো প্রাঙ্গণে গেলেই মালুম হবে। দূরদূরান্ত থেকে ভিড় করেছেন এই পুজো মন্ডপে। এলাকার রাস্তার দুধারে চার চাকা, দু চাকা সার বেঁধে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পিল পিল করে মানুষ এগিয়ে চলেছে পুজো মন্ডপের দিকে। আর পুজো মন্ডপের সামনে যেদিকে চোখ যায়, শুধু মানুষের মাথা আর মাথা। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন এই মন্ডপে। দুর্গাপুর শুধু নয় জেলা সহ ভিন জেলার মানুষজনও এই পুজোর আকর্ষণে ছুটে এসেছেন শংকরপুরে বলে দাবি করেছেন উদ্যোক্তাদের। পুজোর আয়োজনে সাধারণ মানুষজনের সাড়া মিললেও প্রশাসনিক স্বীকৃতি মিলল না। তাতেই ক্ষুব্ধ পুজো উদ্যোক্তারা। তবে মানুষের রায়ে তারাই সেরা। গত কয়েকদিনের মন্ডপের ভিড় তা প্রমাণ করে দিয়েছে। সেক্ষেত্রে পুজো নিয়ে মানুষের রায় বা সাড়ায় সন্তোষ ব্যক্ত করলেও প্রশাসনিক স্বীকৃতি না মেলায় ক্ষোভপ্রকাশ করতে ছাড়েনি এলাকার পঞ্চায়েত কর্তা তথা পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা স্বাধীন ঘোষ। এমনকি বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মানের মনোনয়নে সংশ্লিষ্ট নির্বাচক ও প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিদের ভূমিকার সমালোচনাও করেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button