অভিনব আইন অমান্যে প্রাক্তন সাংসদ, বিধায়ক? প্রশ্নে সরগরম শিল্পাঞ্চল

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর: একদা সাংসদ। দলের দাপুটে নেতা রাজ্য সভাপতি। দেশদশের পথ প্রদর্শক বলাই চলে। আর তিনিই কী না আইন ভঙ্গ বা আইন অমান্য করলেন? সঙ্গী বিধায়ক, অন্যান্য শাগরেদরাও আইন অমান্যকারী প্রাক্তন সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতির পথেই হাঁটলেন। হেলমেট ছাড়াই শিল্পাঞ্চল সফরে দেখা গেল দিলীপ ঘোষকে। ‘নেতা হ্যায় তো কুছ পরয়া নেহি’- হেলমেটহীন বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই সহ অন্যান্য সঙ্গীরা প্রায় হাসিমুখেই প্রাক্তন সাংসদকে সঙ্গ দিলেন। বিজেপি নেতৃত্বের আইন ভঙ্গের এমনই ছবি দেখল শিল্পাঞ্চল। শনিবার দুর্গাপুরের রাজীব গান্ধী স্মারক সাবেক চিত্রালয় মেলা ময়দানে প্রাতঃভ্রমণ সারেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পরে দলের কর্মীরই বুলেট গাড়ির চালকের আসনে বসে পড়েন তিনি। পেছনে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই। কারও মাথায় হেলমেট নেই। বাকি সঙ্গীদেরও একই অবস্থা। এভাবেই শিল্পাঞ্চলের রাস্তায় ঘুরে বেড়ালেন তারা। এ হেন আইনভঙ্গের অভিযোগের উত্তরে সরকারই সেফ নেই, সেখানে সেফ ড্রাইভের কোন প্রশ্নই ওঠে না বলে প্রকারান্তরে জানিয়ে দিলেন তিনি। একইসঙ্গে প্রাক্তন সাংসদ জানান, অনেকদিন বাইক চালায়নি, তাই বাইক চালিয়ে কর্মীদের সঙ্গে চা খেতে এলেন। তবে বিজেপি নেতৃত্বের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, আইন ভাঙার জন্যই তৈরি হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে তার মাথার ব্যামো হয়েছে বলে কটাক্ষও করেন মন্ত্রী।
এদিন, শিল্পাঞ্চল সফরে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে যোগ দেন প্রাক্তন বিজেপি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থার সমালোচনায় সোচ্চার হন। তার বক্তব্যের সমর্থনে পুলিশের উপর আস্থার প্রশ্নে কসবায় গুলি কাণ্ডে কাউন্সিলরের পরিবারের তরফে সিবিআই তদন্তের দাবির প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। এখানেও পুলিশ সহ তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ করেন দিলীপ ঘোষ। শনিবার প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি আবাস, ট্যাব, লটারি সহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে সরাসরি শাসকদলের যোগসাজসের প্রসঙ্গে সরব হন তিনি। এসব নিয়ে খোদ তৃণমূল নেত্রীকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। এদিন, তার কথায় বাংলাদেশে হিন্দু সহ ইসকনের ওপর অত্যাচারের অভিযোগে সুর চড়ান তিনি। পরে দুর্গাপুরে দলীয় কর্মসূচি সেরে বহরমপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
এদিকে, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের অভিযোগে সরব হয়েছে শাসকদল। জেলা তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এ ধরনের অনৈতিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের ফলেই লোকসভায় হারের মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। এই সংস্কৃতির জন্য ছাব্বিশেও বাংলার মানুষজন বিজেপিকে বিদায় করে দেবে বলে দাবি করেন তিনি।