দুর্গাপুরকে সামনে রেখে রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনার পক্ষে সওয়াল শমীকের

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর, ১৭, জুলাই: শিল্পে ফের ঘুরে দাঁড়াবে দুর্গাপুর? এম এ এম সি, হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার সহ বন্ধ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প প্রাণ ফিরে পাবে? ১৮ জুলাই শুক্রবার মোদির সফর ঘিরে এমনই জল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে শিল্পাঞ্চলের জনমানসে। আর এই আবহেই দুর্গাপুরকে সামনে রেখে রাজ্যে সার্বিক শিল্পায়নের ভাবনা উসকে দিলেন শমীক। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের মাঙ্গলিকে ইস্পাত নগরীর নেহেরু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, দুপুর আড়াইটা নাগাদ বিহার থেকে বাংলায় এসে পৌঁছবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে গেইল, সেইল সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি আর্থিক বরাদ্দের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি। প্রসঙ্গক্রমে ১৯৫০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের ঘরোয়া ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে গ্যাস পরিষেবা প্রদানের কথা উল্লেখ করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। সেখানেই বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা এমএএমসি সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দুর্গাপুরে শিল্পের পুনরুজ্জীবনে বিজেপির সদিচ্ছার কথা তুলে ধরেন তিনি। এক কথায়, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে মৃতপ্রায় দুর্গাপুর ফের শিল্পসমৃদ্ধ নগরীর মর্যাদা ফিরে পাবে। পাশাপাশি রাজ্যের ব্যাপক শিল্প সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে তারা উদ্যোগী হবেন বলে জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি। সেক্ষেত্রে দুর্গাপুরকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে শিল্পের প্রসার ঘটবে বলে দাবি করেন তিনি। এদিন, রাজ্য সভাপতি বাংলায় শিল্প সম্ভাবনা বিনষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে দীর্ঘ বাম জমানার অদূরদর্শিতা সহ বর্তমান তৃণমূলের সরকারের হঠকারিতাকে দায়ী করেন। একইসঙ্গে ভ্রান্ত জমি অধিগ্রহণ নীতি সহ জমি জটে মেট্রো রেল সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ আটকে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন শমীকবাবু। বৃহস্পতিবার তিন ফসলি জমিতে শিল্পের বিরোধী হলেও শিল্পের প্রয়োজনে তিন গুণ ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি কৃষকদের শিল্প ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশীদারিত্ব কার্যকর করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন তিনি। সেক্ষেত্রে রাজ্যে সুষ্ঠু শিল্পায়নের স্বার্থে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা মডেল চালু করার আশ্বাস দেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। তার কথায়, শিল্প ছাড়া রাজ্যের গতি নেই। সেক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট জমিনীতি ছাড়া বিনিয়োগ সম্ভব নয় বলে জানান শমীক ভট্টাচার্য। এদিন, বর্তমান রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজ্য বিজেপি সভাপতি জানান, বর্তমানে বাংলা বারুদের স্তুপে পরিণত হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলার মানুষজনের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে ভোটার তালিকা সংশোধনের পক্ষে জোর সওয়াল করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। একইসঙ্গে রাজ্যের অসংগঠিত শ্রমিক ও কৃষকের স্বার্থ উপযোগী প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা, প্রধানমন্ত্রী জনমণ সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলার মানুষজন। সেক্ষেত্রে বর্তমান তৃণমূল সরকারের সংকীর্ণ রাজনৈতিক অভিসন্ধির অভিযোগে সরব হন বিজেপি সভাপতি। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি । বক্তব্যের সমর্থনে কোভিড কালে কেন্দ্রের ভূমিকা সহ অপারেশন সিঁদুরের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের তৃণমূল দল সহ সরকারের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলে বিজেপি সভাপতি বলেন, ইসলামিক মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে তৃণমূল। কিন্তু কোন মূল্যেই বাংলাকে বাংলাদেশ হতে দেওয়া যাবে না পরোক্ষ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সেক্ষেত্রে রাজ্য তথা দেশের সার্বিক উন্নয়নে হিন্দু বাঙালি সহ রাষ্ট্রবাদী মুসলিমদের আহ্বান জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি। বৃহস্পতিবার সিটি সেন্টারের মাঙ্গলিকে এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বিজেপি মুখপাত্র জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই সহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।