সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে বাংলায় বদলের ডাক মোদির

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর, ১৮, জুলাই: পুনরুজ্জীবন সহ শিল্প সমৃদ্ধ বাংলা গড়ার ডাক দিলেন মোদি। শুক্রবার দুর্গাপুরের ইস্পাত নগরীর নেহেরু স্টেডিয়ামে পরিবর্তন সংকল্প সভায় দুর্গাপুর, আসানসোল সহ রাজ্যের বর্তমান শিল্প ব্যবস্থার পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচনায় মুখর হন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। এদিন, বিহারের জনসভা সেরে অন্ডাল বিমানবন্দর হয়ে সড়কপথে দুর্গাপুরে আসেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার দুর্গাপুরে পৌঁছে গেইলের গ্যাস পাইপলাইন, দুর্গাপুর ইস্পাত ও রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেলপথ সংযুক্তিকরণ, অন্ডাল পাণ্ডবেশ্বরের রেলওয়ে ওভারব্রিজের উদ্বোধন সহ পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় সিজিডি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দলীয় সভায় যোগদান করেন তিনি। এদিন, দুর্গাপুর,আসানসোল শিল্পনগরী সহ রাজ্যের সার্বিক শিল্প ব্যবস্থার বেহাল দশার অভিযোগ তুলে তৃণমূল পরিচালিত সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে রাজ্যের শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে বাংলায় তৃণমূল সরকারকে অপসারণের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী। তার কথায়, তৃণমূল জমানায় বাংলায় বিনিয়োগ আসবে না। সেক্ষেত্রে বিজেপি শাসনক্ষমতায় এলে কয়েক মাসের মধ্যেই হাল বদলে যাবে বলে দাবি করেন তিনি। বক্তব্যের সমর্থনে পার্শ্ববর্তী বিজেপি শাসিত অসম, ত্রিপুরার আর্থিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তার কথায়, বাংলায় শিল্প সহায়ক পরিস্থিতি রয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র সমস্ত সুযোগ সুবিধাও মজুত রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সরকারের অপশাসনে প্রায় সবকিছুই বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূল সরে গেলেই বাংলায় বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে বলে জানান নরেন্দ্র মোদি। এসবের পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের প্রশাসন, দুর্নীতি সহ অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে তৃণমূলের ভূমিকার সমালোচনা করেন মোদি। একইসঙ্গে মুসলিম তোষণের চরমসীমা পার করেছে তৃণমূল বলেও সরব হন তিনি। প্রসঙ্গ ক্রমে মুর্শিদাবাদের দাঙ্গা, অশান্তির কথাও শোনা যায় মোদির বক্তব্যে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা দেশের বৈধ নাগরিক নন, সেই সব অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেবে কেন্দ্র। পাশাপাশি অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষে সওয়াল করছে তৃণমূল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সেক্ষেত্রে কোন ওজর-আপত্তি বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার নেহেরু স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় রাজ্যে নারী নিরাপত্তা, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সহ রাজ্যের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গেও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান প্রধানমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে বাংলার ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের বাংলার হৃত সম্মান, মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে রাজ্যে ক্ষমতা বদলের ডাক দেন তিনি। একইসঙ্গে বাংলায় বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানুষজনকে এগিয়ে আসার আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিনের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, শান্তনু ঠাকুর সহ অন্যান্যরা।