দূষণ রোধে পদক্ষেপ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর, ২ জুন: ভয়াবহ দূষণ চিন্তা বাড়াচ্ছে দূর্গাপুরের। আগামীদিনে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন খোদ পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার আধিকারিকদের সতর্ক থাকার আবেদন জানান তিনি। আর এই আবহেই ভূমি রক্ষা কমিটির আন্দোলন, অভিযোগের জেরে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি সিমেন্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে কলকাতার সল্ট থেকে পরিবেশ ভবনে শুনানিতে হাজির থাকার নির্দেশ পাঠাল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। আগামী ১০ জুন ওই কারখানার কর্তাব্যক্তিদের সেখানে হাজির দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বলাই বাহুল্য, দুর্গাপুর নগর নিগমের ৩৫ নং ওয়ার্ড সংলগ্ন গোপালমাঠ গ্রামের ডিএসপি স্ল্যাগ ব্যাঙ্ক লাগোয়া ওই সিমেন্ট কারখানার বিরুদ্ধে ক্রমাগত দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে সরব হন স্থানীয় মানুষজন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে পথে নামে ভূমি রক্ষা কমিটি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সামনে আন্দোলনের জেরে চরম পুলিশি হেনস্তা সহ মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে ফেলা হয় ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্যদের। তাতেও হাল ছাড়েননি তারা। ভূমি রক্ষা কমিটির ধারাবাহিক আন্দোলনের জেরে সম্প্রতি পর্ষদ কর্তারা কারখানার দূষণ সংক্রান্ত হাল-হকিকত খতিয়ে দেখেন। অবশেষে সল্টলেকের পরিবেশ ভবনে শুনানিতে তথ্য প্রমান সহ ওই বেসরকারি সিমেন্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। উল্লেখ্য, এর আগে অন্ডাল লাগোয়া ডিএসটিপিএস ( দুর্গাপুর স্টীল থার্মাল পাওয়ার স্টেশন) কর্তৃপক্ষকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছর থেকে এ সংক্রান্ত দফায় দফায় শুনানিতে পরিবেশ সহ জনজীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় দূষণবিধি লাগুক করার নির্দেশ দেয় পর্ষদ। গত বছর ১১ ডিসেম্বর সংস্থার ছাই পরিবহন, ছাই পুকুরে বর্জ্য ফেলার বিষয়ে বিশেষ বিধি নিষেধ সহ ২০ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি জমার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ যথাযথভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে চরম গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। শেষমেষ পর্ষদের ২০২৪ সালের নির্দেশিকা অবিলম্বে কার্যকর করার ক্ষেত্রে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এমনকি ওই সংস্থার ওপরে চাপ বাড়াতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি পালনে সতর্ক নজরদারি চালানোর ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ভূমি রক্ষা কমিটির তরফে ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে পরিবেশ প্রকৃতি সহ জনজীবনের স্বার্থ সুরক্ষায় তাদের আন্দোলনের ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বলে মনে করেন তিনি। একইসঙ্গে পর্ষদের তরফে পদক্ষেপ গ্রহণে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমূহের বিরুদ্ধে দূষণ সংক্রান্ত কোনো রকম গাফিলতি বা উদাসীনতার কারণ ঘটলে আন্দোলন থেকে পিছপা হবে না ভূমি রক্ষা কমিটি বলে সাফ জানিয়ে দেন ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, সুমন গোপরা। তবে এ প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য, দুর্গাপুরের সার্বিক দূষণ নিয়ে যে সমস্ত নেতানেত্রী সভা সমিতিতে চিন্তা ব্যক্ত করছেন, তারা পথে নেমে প্রকৃত প্রতিবাদে সামিল হলে শিল্পাঞ্চলের মানুষজন স্বস্তি পাবেন।