জেলা

মহাকুম্ভের নামেই স্মৃতি ফিরল অর্জুনের!

সংবাদ সফর, আসানসোল: নাম মাহাত্ম্য বলাই চলে। কুম্ভ নামেই স্মৃতি ফিরল অর্জুনের। স্মৃতিভ্রংশের কারণে ১৫ বছর ধরে পরিবার-পরিজনেদের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ছিলেন প্রকাশ ওরফে অর্জুন মাহাতো। অবশেষে কুম্ভমেলার যাওয়ার কথা বলতেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে যায় তার। অবশেষে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে তুলে দেওয়া হয় পরিবার-পরিজনেদের হাতে।

আশ্চর্য এই ঘটনা সূত্রে জানা যায়, প্রকাশ ওরফে অর্জুন মাহাতো কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের পার্ক সার্কাস এলাকার সাফাইকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু বছর ১৫ আগে কর্মরত অবস্থাতেই মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি। তারপর কোনক্রমে একটি গাড়িতে করে রানীগঞ্জ থানার রানীসায়রে এসে পৌঁছান অর্জুন। সেখানে সুমিত গুপ্তার হোটেলে কাজ মিলে যায় তার। সেখানে তার নতুন নাম হয় পালোয়ান।

হঠাৎই বুধবার হোটেল মালিক তাকে নিয়ে মহাকুম্ভে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। একথা তাকে জানাতেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে যায় অর্জুনের। গড়গড় করে তার নাম ঠিকানা বলতে থাকেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের কোডারমা জেলার মারকাচ্ছো থানার কডদিহি গ্রামেই আদি নিবাস তার। এরপর একে একে বাবা, দাদা সহ স্ত্রী পুত্র পরিবারের নাম মনে পড়ে যায় তার।

তড়িঘড়ি রানীগঞ্জ থানার পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়িতে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশের খোঁজখবরে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। পরে স্থানীয় সমাজসেবী সাধন সিংহের সহায়তায় হোটেল মালিক সুমিত গুপ্তা স্ত্রী গীতা দেবী, ভাই জেঠু মাহাতো সহ পরিবারের অন্যান্যদের হাতে তুলে দেন পালোয়ান ওরফে অর্জুনকে। এত বছর পরে একে অপরকে দেখতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তারা।

কুম্ভ নামেই স্মৃতি ফিরে পেয়েছেন তিনি। তাই রানীসায়ের এলাকার মানুষজনেদের সঙ্গে মহাকুম্ভে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশও করেন অর্জুন। একদিকে, যখন পরিবারের প্রিয় সদস্যকে ফিরে পেয়ে গীতাদেবী, জেঠুরা আনন্দে আত্মহারা, ঠিক তখনই ক্ষণিকের অতিথি অর্জুনকে কাছছাড়া করার দুঃখে ভারাক্রান্ত হোটেল মালিক সহ এলাকার মানুষজন। তবে আগামীদিনে অর্জুনের জীবন সুন্দর হয়ে উঠুক, এই কামনা করেছেন তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button