ভয়াবহ খনি বিস্ফোরণে মৃত নয়! ক্ষতিপূরণ সহ চাকরির ঘোষণা সরকারের
সংবাদ সফর, বীরভূম: ভয়াবহ খনি বিস্ফোরণে প্রাণ গেল ৯ জন শ্রমিকের! বীরভূমের লোকপুর থানা এলাকায় এই বিস্ফোরণে১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর মিলেছে। তাদের দুর্গাপুরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে বলে বিশেষ সূত্রে খবর মেলে। যদিও জেলা পুলিশ সুপারের দাবি, মৃতের সংখ্যা ৬। তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চতুর্থীর দিনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার পর এলাকার মানুষ ক্ষতিপূরণের দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বীরভূমের শেষ প্রান্ত লোকপুর থানার ভাদুলিয়া জঙ্গলে একটি খোলামুখ কয়লাখনি রয়েছে। গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কয়লাখনি পি ডি সি এল-এর অধীনে রয়েছে। পুজোর আগে কয়লার অত্যাধিক চাহিদা মেটাতে বেশি করে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছিল বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিস্ফোরণ করার জন্য গাড়িতে বোঝাই করে বিস্ফোরক নিয়ে আসা হয়েছিল খনি এলাকায়। গাড়ি থেকে সেই বিস্ফোরক নামাতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। বিস্ফোরণে শ্রমিকদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৮ শ্রমিকের। হাসপাতালে মারা যান ১ জন বলে জানা যায়। মৃতদের তালিকায় রয়েছেন দেবগঞ্জের যুদ্ধ মারান্ডি (২৮), বাস্তবপুরের সোমলাল হেমরম (২৮), জয়দেব মুর্মু (৩২), রবিলাল মারান্ডি(২৮), মঙ্গল মারান্ডি(২৯) ও লোকেশ্বর হেমব্রম । পলপাই গ্রামের বাসিন্দা তথা গাড়ির চালক ভজহরি ঘোষ (৩৫)। এছাড়াও এ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের কাজোরার বাসিন্দা আসরাফিন যাদব (৪২), অমৃত সিং (৪০) নামের দুই খনি শ্রমিকের। ইতিমধ্যেই এজেন্সি সহ সরকারের তরফে নিহতদের পরিবার পিছু সর্বমোট ৩২ লক্ষ টাকা করে অনুদানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মৃতদের পরিবার প্রতি একজনকে হোমগার্ডের চাকরির ঘোষণা করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। এদিকে ,এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এনআইএ তদন্তের দাবিতে সরব হন এলাকার বিধায়ক অনুপ সাহা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় বিক্ষোভ আন্দোলনে নামেন তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিধায়ক সহ মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট খনি প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ঘটনার পরেই জনরোষ থেকে বাঁচতে খনি কর্তৃপক্ষের কর্তাব্যক্তিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। এদিকে, কয়লা খনিতে এই ধরনের দুর্ঘটনা কিভাবে ঘটল- জেলা প্রশাসনের তরফে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।