শিল্পাঞ্চল

দূষণের বিরুদ্ধে জোর লড়াইয়ের প্রস্তুতি দুর্গাপুরে

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর: দূষণের বিরুদ্ধে জোর লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে দুর্গাপুরে। আগামী ১৯ মার্চ বুধবার সিটি সেন্টারে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সামনে অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছে ভূমি রক্ষা কমিটি। অভিযোগ, দুর্গাপুর নগর নিগমের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া গোপালমাঠ গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা চরম দূষণের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এলাকা লাগোয়া দুর্গাপুর স্টিল থার্মাল পাওয়ার স্টেশন ( ডিএসটিপিএস)-এর ছাই সহ পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর সিমেন্ট কারখানার দূষণের কারণে জনজীবন বিপন্ন বলে অভিযোগ করেছেন ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য সমর্থকরা। ইতিমধ্যেই এসবের প্রতিবাদে গত ১৬ মার্চ গোপালমাঠ জল ট্যাংকের সামনে গণস্বাক্ষর অভিযানে নামেন তারা। কমিটির তরফে ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, গোপালমাঠ গ্রাম ঘেঁসে ডিএসটিপিএস ও দুর্গাপুর সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার ছাই পুকুর সহ দুষণের কারণে জনজীবনে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে কোনরকম সুরক্ষার কথা মাথায় না রেখে দুর্গাপুর সিমেন্ট কারখানার দূষিত বর্জ্য বোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল করছে এলাকার ভেতর দিয়ে। ফলে চরম বিপদে পড়ে গিয়েছেন এলাকার মানুষজন। অন্যদিকে, ডিএসটিপিএস কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থা ও উদাসীনতার ফলে গ্রাম লাগোয়া ছাইপুকুরগুলি রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু জনজীবন বিপন্ন সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সহ শাসক নেতৃত্বের তরফে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা। সেক্ষেত্রে এ ধরনের বেআইনি কাজকারবারে মোটা টাকা লেনদেন হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। এ ব্যাপারে ধ্রুবজ্যোতিবাবু জানিয়েছেন, জনবসতি বা লোকালয়ের পাশে ছাই পুকুরের অবস্থান মোটেই সমীচীন নয়। কিন্তু জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক ব্যবস্থার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন প্রভাবশালী শাসক নেতৃত্বের একাংশ। অথচ ডিএসটিপিএসে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি সিমেন্ট কারখানায় শ্রমিকরা স্বাস্থ্যসুরক্ষার ডাস্ট অ্যালাউন্সটুকুও পান না বলে অভিযোগ ধ্রুবজ্যোতিবাবুর। কিন্তু নিত্যদিন এসব কারখানার দূষণের মারাত্মক খেসারত দিতে হচ্ছে ভূমিপুত্রদের বলে সরব হন তিনি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ডিএসটিপিএস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব না হলেও বিড়লা গোষ্ঠীর ওই সিমেন্ট কারখানার আধিকারিক মৃন্ময় মিশ্র বলেন, সুনাম ও সুখ্যাতির সঙ্গে গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই কারখানা চলছে দুর্গাপুরে। শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষার পাশাপাশি দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদির খামতি নেই। সেক্ষেত্রে এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু নিজেদের বক্তব্যে অনড় ভূমি রক্ষা কমিটি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ১৯ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে ডাক দিয়েছে ভূমি রক্ষা কমিটি। পরিবেশ প্রকৃতি ও জনজীবন রক্ষায় ছাইপুকুর বন্ধ সহ দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী দিনের বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button