বালি মাফিয়াদের তাণ্ডব চরমে, প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন শিল্পাঞ্চলে

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর, ৯ জুলাই: অসহায় প্রশাসন! প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের হাত-পা বাঁধা রয়েছে! নেপথ্যের কোন নির্দেশ না কি অন্য কিছু? কার বা কাদের মদতে খনি শিল্পাঞ্চলে বালি মাফিয়ারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে? এমনই হাজারও প্রশ্নে ফের সরব ভূমি রক্ষা কমিটি। সরকারি নির্দেশে ১ জুলাই থেকে নদ-নদী থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নৌকায় বড় বড় পাম্প লাগিয়ে ওয়ারিয়া মানা এলাকায় বেআইনিভাবে বালি উত্তোলন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন কমিটির সদস্যরা। এ ব্যাপারে গত ৮ জুলাই জেলার এই ভয়াবহ ছবি, ভিডিও ও তথ্যপ্রমান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী , সেচমন্ত্রী সহ মুখ্যসচিব , পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসক, বাঁকুড়ার জেলাশাসক, মহকুমা শাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। তাদের কথায়, বালি মাফিয়াদের তাণ্ডবে দামোদর নদে নিরীহ কিশোর যুবকদের প্রাণ চলে যাচ্ছে। অথচ প্রকাশ্য দিবালোকে নদীর বুকের ওপর ছাই ফেলে রাস্তা তৈরি সহ জেসিবি এমনকি সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে পাম্প লাগিয়ে অবৈধ ভাবে বালি খননে খামতি নেই। এ সংক্রান্ত ছবি, ভিডিও পুলিশ সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে প্রতিনিয়ত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, সুমন গোপরা। সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন সহ শাসকদলের একাংশের প্রত্যক্ষ মদতে আইন নিয়ম-নীতি কোন কিছুর তোয়াক্কা করছেন না বালি মাফিয়ারা। প্রসঙ্গক্রমে ধ্রুবজ্যোতিবাবু জানান, মাত্র কদিন আগেই পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসকের তরফে বৈঠকে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বরদাস্ত করা যাবে না বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি বদল হল কই? আসলে কাগজে-কলমে প্রশাসনের অস্তিত্ব থাকলেও তা পরিচালনার ভার অলিখিতভাবে মাফিয়াদের হাতে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ কমিটির। কিন্তু প্রকৃতি পরিবেশের পাশাপাশি জনস্বার্থে এসবের বিরুদ্ধে ভূমি রক্ষা কমিটির আন্দোলন বন্ধ হবে না। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা। উল্লেখ্য, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মোতাবেক বুধবার শিল্পাঞ্চলে সার্বিক পরিবেশ রক্ষার দাবিতে প্রতিকী অবস্থানে বসেন ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। এদিন, গোপালমাঠ লাগোয়া বেসরকারি সিমেন্ট কারখানার বিরুদ্ধে ফের দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে সরব হন তিনি। একইসঙ্গে এসব বন্ধে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সোচ্চার হন ধ্রুবজ্যোতিবাবু। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে অতীতে ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্যদের চরম পুলিসি ও আইনি হেনস্থার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। সেক্ষেত্রে দুর্গাপুরের সার্বিক পরিস্থিতি রক্ষার পাশাপাশি কমিটির অন্যান্য সদস্যদের বাঁচাতে এককভাবে এই প্রতীকী অবস্থানে সামিল হয়েছেন বলে জানান ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে শাসক দল সহ প্রশাসনের তরফে কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।