কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগে সরব মন্ত্রী

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর: ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগে সোচ্চার হলেন মন্ত্রী। আর্থিক বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্যে উন্নয়নের গতি থেমে থাকেনি বলে জানিয়ে দেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রাম উন্নয়ন ও সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। শুক্রবার দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারে সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের পর্যালোচনা বৈঠকে অংশ নেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের মন্ত্রী। এদিন, ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধের অভিযোগ করেন তিনি। তার কথায়, ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণে পুরস্কৃত হয়েছে বাংলা। কিন্তু তা সত্বেও একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ওইসব প্রকল্পের বরাদ্দ বন্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা হয়। মন্ত্রীর তরফে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে প্রকল্প রূপায়ণের প্রতিশ্রুতি মিললেও তা কার্যকর করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের অর্থভাণ্ডার থেকে ১১ লক্ষ ১০০০ উপভোক্তাকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি প্রদান করেন। একইসঙ্গে কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ পরিবারকে বাংলা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে জানান মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।
তার কথায়, গ্রামীন অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার কেন্দ্রীয় চক্রান্ত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সৃজনীতে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, পরিকল্পনা মোতাবেক পথশ্রী প্রকল্পের প্রায় কুড়ি হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হতে চলেছে। মহিলাদের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আর্থিক সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে তৎপর রাজ্য সরকার বলে জানান মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। শুক্রবার পর্যালোচনা বৈঠক শেষে রাজ্যের মন্ত্রীর তরফে বঙ্গমাতা, সৃজন, মনিমালা, আশা সহ বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে আনন্দধারা প্রকল্পে ক্যাশ ক্রেডিট লোনের টাকা তুলে দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণদানের ব্যবস্থা করেছে সরকার। একইসঙ্গে এই গোষ্ঠীর পণ্যসামগ্রী বাজারজাত করার লক্ষ্যে সৃষ্টিশ্রী ও সরস মেলার আয়োজন করা হয়েছে বাংলায়। এইসব মেলা থেকে এ বছর ৭০ কোটি টাকা আয় হয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।
শুক্রবার সৃজনীতে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের পর্যালোচনা বৈঠকে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সদস্যরা তাদের অভাব অভিযোগের কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে এই বৈঠকে গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে ব্লক প্রশাসনের যোগ সূত্র নিবিড় করার ওপর জোর দেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। এদিন এই বৈঠকে রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব ডঃ উলগানাথন, পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নামবালাম, জেলা পরিষদের মেন্টর ভি শিবদাশন দাশু, সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।