শিল্পাঞ্চল
সমবায় নির্বাচনে জোটের তত্ত্ব মানতে নারাজ কংগ্রেস

- সংবাদ সফর, দুর্গাপুর: আইএনটিইউসি নামধারী কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের ধান্দা চরিতার্থ করতে ময়দানে নেমেছেন। দুর্গাপুর স্টিল পিপলস কোঅপারেটিভ ব্যাংকের নির্বাচনে অলিখিত জোটের আলোচনা প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী। তার কথায়, এরা কংগ্রেসের কেউ নয়। ফলে এই সমবায় নির্বাচনে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এ ধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে। এমনকি এ ধরনের জোট বা আঁতাতের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অনুমতি বা অনুমোদন নিয়েও মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি দেবেশের। এরই পাশাপাশি সিটু বা বিএমএসকে মনোনয়ন পত্র দাখিল না করতে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি। এদিকে, পিপলস কো-অপারেটিভ ব্যাংকের নির্বাচনে আইএনটিইউসি বা ইনটাকের জোট বা আঁতাত নিয়ে জেলা ইনটাক সভাপতিও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ব্যাপারে তিনিও অন্ধকারে রয়েছেন বলে জানান ইনটাক সভাপতিও সুভাষ সাহা। তার কথায়, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেই এ ব্যাপারে ইনটাকের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদনের বিষয়টি নজরে আসে। সেক্ষেত্রে সব কিছুই জেলা নেতৃত্বের অজান্তেই হয়েছে বলে প্রকারান্তরে জানিয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে এ্যালয় স্টীল প্ল্যান্টের সমবায় নির্বাচন নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের টালবাহানার অভিযোগে সরব হয়েছেন জেলা ইনটাক সভাপতি। তবে দুর্গাপুর স্টিল পিপলস কোঅপারেটিভ ব্যাংকের নির্বাচনে অলিখিত জোট বা আঁতাত প্রসঙ্গে ইনটাক নেতা রজত দীক্ষিতের বক্তব্য, রাজ্য ইনটাক সভাপতি কামারুজ্জামান কামার সহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতিক্রমে এই সমবায় নির্বাচনে পারস্পরিক বোঝাপড়ায় আসন সমঝোতা হয়েছে। সেক্ষেত্রে শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষা সহ এই ব্যাংকের সুষ্ঠু পরিষেবা ও পরিচালন ব্যবস্থার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি ওই ইনটাক নেতার। একইসঙ্গে নিজেকে বুথ স্তরের কংগ্রেস কর্মী হিসেবে দাবি করেন তিনি। সেক্ষেত্রে এসব নিয়ে সমালোচনা বা অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের ওই ইনটাক নেতা। এদিকে, শেষ দিনেও বিরোধী সিটু বা বিএমএসের তরফে কোনও মনোনয়নপত্র দাখিলের খবর মেলেনি। সেক্ষেত্রে প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সমবায় ব্যাংক দখলের পথে তৃণমূল সহ তার সহযোগীরা। শুক্রবার দুর্গাপুর স্টীল পিপলস কো-অপারেটিভ ব্যাংকের পরিচালন সমিতির নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল। এদিনেও সিটু বা বিএমএসের তরফে কোন মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়নি। সেক্ষেত্রে অবশ্য মনোনয়নের শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সোচ্চার হয়েছেন সিটু সহ অন্যান্যরা। এই সমবায় নির্বাচনে ৩৫টি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। ৬টিতে ইনটাক অর্থাৎ আইএনটিইউসি ও ৩টি আসনে রয়েছে এইচএমএস অর্থাৎ হিন্দ মজদুর সংঘ। তবে তৃণমূলের তরফে দুটি বাড়তি আসনে মনোনয়ন দাখিলা নিয়ে রীতিমত সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বলাই বাহুল্য, ২০১৭ সালের পর থেকে এই সমবায় ব্যাংকের পরিচালন সমিতির কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। স্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিক মিলে প্রায় ১২ হাজার সদস্য রয়েছেন। মোট ৪২টি আসনে ব্যাংকের প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা। দীর্ঘ আট বছর পর এই সমবায় ব্যাংকের দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে শাসকদল অর্থাৎ তৃণমূল। তবে অন্য দলের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা করলেও নিজের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে এই সমবায় ব্যাংকের নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে। তৃণমূল বা আইএনটিটিইউসির তরফে দুটি বাড়তি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা পড়ে। আর তা নিয়েই রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন শাসক নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসব নিয়েও কটাক্ষ করেছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর কথায়, নিজের দলেই তৃণমূল জোটবদ্ধ নয়, ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনার তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। যদিও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল পর্ব শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন আইএনটিটিইউসি জেলা নেতৃত্ব। একইসঙ্গে মনোনয়ন পর্বে সন্ত্রাস বা বাধাদানের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক।