শিল্পাঞ্চল

শ্রমিক সুরক্ষার প্রশ্নে কেন্দ্র ও রাজ্যের সমালোচনায় ইনটাক

সংবাদ সফর, দুর্গাপুর, ৭, জুলাই: শ্রমিকের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষায় আঘাত হানছে কেন্দ্র। একইসঙ্গে শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষায় রাজ্যের মমতা সরকারের সমালোচনাতেও মুখর হল আইএনটিইউসি। সোমবার দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের সিটু কার্যালয়ে ৯ জুলাই সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন রাজ্য ইনটাক সভাপতি এম কামারুজ্জামান কামার। সেখানেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অধিকারের প্রশ্নে কেন্দ্রের পাশাপাশি বর্তমান রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। দেশ জুড়ে শ্রম কোড, বিলগ্নীকরণ সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে বিভিন্ন শ্রমিক ও কৃষক সংগঠন এগিয়ে এসেছে বলে দাবি করেন রাজ্য ইনটাক সভাপতি। তবে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন এই ধর্মঘটে সামিল হলেও ভারতীয় মজদুর সংঘ অর্থাৎ বিএমএস, তৃণমূল পরিচালিত আইএনটিটিইউসি তাদের সঙ্গে নেই বলে জানান তিনি। যদিও সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ডিএসপির ইনটাক নেতা রজত দাক্ষিতের কথাতে এই ধর্মঘটে আইএনটিটিইউসি-র নৈতিক সমর্থনের কথা শোনা যায়। কিন্তু বাস্তবে দুর্গাপুরের বিভিন্ন কারখানার গেটের সামনে এই ধর্মঘটের বিরোধিতায় আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব সরব হন। সেক্ষেত্রে দুর্গাপুরের আইএনটিটিইউসির কোর কমিটির অবস্থান নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন ওই ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। সোমবার সিটু দফতরে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চের তরফে সাধারণ ধর্মঘটের প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যায় রাজ্য ইনটাক সভাপতি এম কামারুজ্জামান কামার বলেন, বর্তমান বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত একতরফা ভাবে শ্রম কোড, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নীকরণ সহ বিভিন্ন শ্রমিক স্বার্থ পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। তবে শুধু শ্রমিকরাই নন, কেন্দ্রীয় নীতির ফলে দেশের কৃষক সমাজও বিপন্ন। মুখে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলা হলেও শ্রমিক, কৃষকদের সর্বনাশের পথ সুনিশ্চিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার বলে সরব হন তিনি। সেক্ষেত্রে দেশের পাঁচটি কৃষক সংগঠন এই ধর্মঘটের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন বলে জানান কামারুজ্জামান কামার। এদিন, শ্রমিকদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষার প্রশ্নে বর্তমান রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও সোচ্চার হন রাজ্য ইনটাক সভাপতি এম কামারুজ্জামান কামার। সেক্ষেত্রে এই সরকারকে শ্রমিক বিরোধী বলে আখ্যা দেন তিনি। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নীতির ফলে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের মতো বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিলগ্নীকরণের নামে এএসপি, ইস্কো কারখানা বেসরকারিকরণের পথ প্রশস্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সংঘবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের ফলে এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি বলে দাবি করেন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সিটু, ইনটাক নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে রাজ্য তথা দেশের শ্রমিক ও কৃষক স্বার্থ সুরক্ষায় ৯ জুলাই সাধারণ ধর্মঘটকে সফল করার আহ্বান জানান তারা। এদিন এই সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য ইনটেক সভাপতি এম কামারুজ্জামান কামার সহ উপস্থিত ছিলেন জেলা ইনটাক সভাপতি সুভাষ সাহা, স্টিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের রজত দাক্ষিত, সিটু নেতা বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী সহ অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button