ফের পিছাল চার্জ গঠনের দিন, কয়লা পাচার মামলার পরিণতি নিয়ে প্রশ্ন চরমে
কয়লা কান্ডের তদন্ত কোন পথে? খনি-শিল্পাঞ্চলের কয়লা ‘ কালা কাহিনীব’ আসল সত্য কবে প্রকাশ পাবে? শনিবার ফের আসানসোলের সিবিআই আদালতে এ তদন্তের চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ায় এমনই প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠেছে। এদিনও চার্জ গঠনের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি আইনি জটিলতায়। দু মাস পর অর্থাৎ পুজোর পরে আগামী ১৪ নভেম্বর এই মামলার চূড়ান্ত চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। সেক্ষেত্রে মাসের পর মাস শুধু দিন বদল হচ্ছে। চূড়ান্ত চার্জ গঠন করা যাচ্ছে না। তবে কি এর পেছনেও কেন্দ্র-রাজ্য সেটিং তত্ত্ব কাজ করছে? এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। বলাই বাহুল্য, এর আগে গত ৩ জুলাই ও ৯ আগস্ট চূড়ান্ত চার্জ গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। শনিবারও পিছিয়ে গেল দিন। গত ৯ আগস্ট আসানসোল সিবিআই আদালতে এই মামলার শুক্রবার চার্জ গঠন বা ফ্রেম করার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন তা হয়নি। এই মামলার চার্জশিটে নাম থাকা ৫০ জনের মধ্যে এক অভিযুক্ত সামশের হোসেন গত ৯ আগস্ট সিবিআই আদালতে গরহাজির ছিলেন। এছাড়াও সেদিন চার্জশিটে থাকা একটি বেসরকারি কোম্পানির তরফে তার লিকিউডেটার আইনজীবি আবেদন করেছিলেন। তিনি তার আবেদনে বলেছিলেন, এই কোম্পানি লিকিউডেশনে চলে গিয়েছে। এই ব্যাপারে আদালতকে তাদের কিছু জানানোর আছে। তার এই আবেদন আদালত গ্রহণ করে। সব মিলিয়ে গত ৯ আগস্ট এই মামলার কোন সওয়াল-জবাব বা শুনানি হয়নি। সবশেষে আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন যে, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সেদিন সিবিআইকে এই মামলার চার্জ গঠন বা ফ্রেম করার নির্দেশ বিচারক দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে ৭ সেপ্টেম্বর সবাইকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই বেসরকারি কোম্পানির লিকিউডেটারের আবেদনের শুনানি হবে বলেও বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে গত ৯ আগস্ট চার্জশিটে নাম থাকা সব অভিযুক্তদের আইনজীবীদেরকে এই মামলার যাবতীয় নথি দেওয়া হয়। এর আগের শুনানিগুলিতে অভিযুক্তদের তরফে তাদের আইনজীবীরা চার্জশিটের কপি পেতে আবেদন করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা দেওয়া হয়। গত ৯ আগস্ট আদালতে অনুপ মাজি ওরফে লালা সহ মোট ৪৯ জন হাজির ছিলেন। প্রসঙ্গত, ৯ আগস্টের আগে গত ৩ জুলাই এই মামলার চার্জ গঠন করার কথা ছিলো। কিন্তু সেদিন দুই কয়লা কারবারি তারকেশ্বর মণ্ডল ও মহম্মদ সাকিল গরহাজির থাকায় সেদিন তা সম্ভব হয়নি। এই দুজনের নাম সিবিআইয়ের পেশ করা দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে আছে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। যাইহোক, তারিখ পে তারিখ বদল হলেও শনিবারও চার্জ গঠন করা গেল না কয়লা কাণ্ডের মামলায়। সেক্ষেত্রে তদন্তের গতিপ্রকৃতি সহ এই মামলার পরিণতি নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক।