স্বাস্থ্য

শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে টক দই!

বিশেষ প্রতিবেদন: প্রায় সকলের প্রিয় টক দই। দারুণ জনপ্রিয় এ টক দই আমরা কমবেশি সবাই খাই। তবে শুধু স্বাদেগন্ধে নয়, শরীরের বিশেষ প্রয়োজনে কেউ কেউ টক দই খান। বিশেষ করে মহিলারা ওজন কমাতে টক দই খেয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন, টক দই খেলে কি ওজন কমে? কিংবা টক দই কি দেহের চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে? টক দইয়ে বাড়তি চিনি বা শর্করা না থাকায় তা মিষ্টি দইয়ের তুলনায় স্বাস্থ্যকর মনে করেন অনেকেই।
পুষ্টিবিদদের মতে, গুণগত মানে মিষ্টি দইয়ের চেয়ে টক দইকে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, টক দইয়ের এমন কোনও বৈশিষ্ট্যও নেই, যার প্রভাবে সরাসরি দেহের চর্বি কমতে পারে বা ওজন কমতে পারে। তবু কেন ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়? এ নিয়ে পুষ্টিবিদরা জানান, যদি কেউ পর্যাপ্ত পরিমাণে টক দই খান, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তার ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে আসবে। সেক্ষেত্রে ভাজাভুজি খাবার কিংবা ফাস্টফুডের পরিবর্তে যদি কেউ টক দই খাওয়ার অভ্যাস করেন, তাহলে ক্যালরি গ্রহণের মোট পরিমাণ কমে আসে। এভাবে ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে টক দই বলে ধারণা তাদের। একইভাবে অন্য কোনও সময় খাওয়ার পাতে দই রাখলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। চিড়ে বা কলা সহযোগে দই খেতে পছ¨ করেন। সেক্ষেত্রে মিষ্টি দইয়ের পরিবর্তে টক দই অনেক বেশি উপাদেয় হতে পারে। তাহলে অবশ্যই বাড়তি চিনির ক্যালরিটুকু এড়াতে পারবেন। অন্যদিকে, সালাদ ড্রেসিংয়ের ক্ষেত্রে মেয়োনেজের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে টক দই। পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ক্যালরি গ্রহণকে একটি পরিমিত সীমার মধ্যে রাখতেই টক দই খাওয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তা ওজন কমাতে সহায়ক বলে মনে করেন তারা। তবে এসবের পাশাপাশি পর্যাপ্ত হাঁটাহাঁটি বা অন্যান্য ব্যায়ামও চালিয়ে ৎেতে হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তবেই ওজন কমবে বলে মত পুষ্টিবিদদের। নিচে টক দই সহযোগে বেশ কিছু উপাদেয় ডিশের কথা আলোচনা করা হল।
১. দই সহযোগে রায়তা: টমেটো কুচি, পেঁয়াজ কুচি, জিরা গুঁড়ো, কাঁচা মরিচ কুচি, চাট মসলা এবং বেশি করে টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে বানিয়ে নিন রায়তা। ওজন কমাতে সাহায্য করবে এই খাবার।
২. দই মিশিয়ে ফল: ফল ওজন কমানোর পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। আপনার প্রিয় ফল কেটে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। আপেল, কিউই, কলা, পেয়ারা, ডালিম, তরমুজের সঙ্গে দই মিশিয়ে খেতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য এই খাবার আদর্শ। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।
৩. দই ও গ্রানোলার মিশ্রণ: গ্রানোলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। দইয়ের সঙ্গে গ্রানোলার মিশ্রণ লো-ক্যালরিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। সুগার-ফ্রি, লো-ফ্যাট বা কম চিনিযুক্ত গ্রানোলা খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।
৪. দইয়ের সঙ্গে শুকনো ফল: দইয়ের সঙ্গে খেজুর, আখরোট এবং অন্যান্য ড্রাই ফ্রুটস খেতে পারেন। ড্রাই ফ্রুটস, বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ও ক্যালরি পোড়াতে কার্যকর।
৫. দই সহযোগে ওটস: ওজন কমাতে ওটসের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আর যদি টক দইয়ের সঙ্গে ওটস মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে তো আরও উপকার পাবেন।
পরিশেষে বলতেই হয়, কোনও কোনও খাদ্যসামগ্রী অনেকের ক্ষেত্রে গ্রহণে সমস্যা তৈরি করতে পারে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button